Posts

যে জ্ঞান ফরযে কেফায়া

Image
প্রকাশ থাকে যে, শিক্ষার প্রকারসমূহ উল্লেখ না করা পর্যন্ত কোনটি ফরয এবং কোন্‌টি ফরয নয়- এর পার্থক্য বুঝা যাবে না।  ফরযে কেফায়ার দিক দিয়ে জ্ঞান দু'রকম- শরীয়তগত ও শরীয়ত বহির্ভূত।  পয়গম্বরগণের কাছ থেকে যে জ্ঞান অর্জিত হয় এবং বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা ও শ্রবণ দ্বারা অর্জিত হয় না, তাকে আমরা শরীয়তগত জ্ঞান বলে থাকি। যেমন, অংক শাস্ত্র বুদ্ধি দ্বারা, চিকিৎসা শাস্ত্র অভিজ্ঞতার দ্বারা এবং অভিধান শাস্ত্র শ্রবণের দ্বারা অর্জিত হয়। যে জ্ঞান শরীয়তগত নয়, তা তিন প্রকার- ভাল, মন্দ, অনুমােদিত। যে জ্ঞানের সাথে পার্থিব বিষয়াদির উপযােগিতা জড়িত, তা ভাল জ্ঞান; যেমন চিকিৎসা ও অংক শাস্ত্র! এ শ্রেণীর জ্ঞানের মধ্যে কতক ফরযে কেফায়া এবং কতক শুধু ভাল- ফরয নয়। পার্থিব বিষয়াদিতে যে জ্ঞানের প্রয়ােজন তা ফরযে কেফায়া। যেমন চিকিৎসা শাস্ত্র। দেহের সুস্থতার জন্যে এটা জরুরী। লেনদেন, ওসিয়ত, উত্তরাধিকার বন্টন ইত্যাদিতে অংক শাস্ত্র জরুরী। শহরে কোন ব্যক্তি এ জ্ঞানের অধিকারী না থাকলে শহরবাসীর অসুবিধার অন্ত থাকবে না। কিন্তু অংক শাস্ত্রে একজন জ্ঞানী হলেও যথেষ্ট হয়ে যায় এবং অন্যরা এ ফরয থেকে অব্যাহতি পায়। আমরা চিকিৎস

যে জ্ঞান ফরযে আইন

Image
 রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয। * জ্ঞান অর্জন কর; যদিও তা চীন দেশে থাকে। যে জ্ঞান প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরযে আইন, তা কি?  এ ব্যাপারে মতভেদ আছে এবং এতে বিশটিরও বেশী মতের সন্ধান পাওয়া যায়। আমরা সবগুলাের বিবরণ দিচ্ছি না। তবে মতভেদের সারকথা প্রত্যেক পক্ষই সে জ্ঞানকে অত্যাবশ্যক বলেছেন, যাতে সে নিজে নিয়ােজিত ছিল। উদাহরণতঃ কালাম শাস্ত্রের পণ্ডিতগণ বলেন, কালাম শাস্ত্রই ফরযে আইন। কারণ, তওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদ এর মাধ্যমেই জানা যায় এবং আল্লাহ তাআলার সত্তা ও গুণাবলীর জ্ঞান এ শাস্ত্রের দ্বারাই অর্জিত হয়। ফেকাহবিদগণ বলেন, ফেকাহশাস্ত্র শিক্ষা করা ফরযে আইন। কারণ, এর মাধ্যমে এবাদত, হালাল-হারাম এবং জায়েয। -জায়েয ও আদান-প্রদান সম্পর্কে জানা যায়। তফসীরবিদ ও হাদীসবিদগণ বলেন ঃ আল্লাহর কিতাব ও রসূলের (সাঃ) সুন্নত শিক্ষা করা ফরযে আইন। কেননা, এ দু'টি থেকেই সকল শাস্ত্রের উৎপত্তি। সূফীগণ বলেন ? ফরযে আইন হচ্ছে আমাদের জ্ঞান। তাদের কেউ কেউ বলেন, বান্দার নিজের অবস্থা এবং আল্লাহ তা'আলার কাছে তার মর্যাদার অবস্থা জানা ফরযে আইন। কেউ বলেন ঃ এখলাস, নফসের অপবাদ এবং শয

শিক্ষাদানের ফযীলত সম্পর্কে সাহাবী ও তাবেয়ীগণের উক্তি

Image
* হযরত ওমর (রাঃ) বলেনঃ যেব্যক্তি কোন হাদীস বর্ণনা করে এবং তদনুযায়ী কাজ করে, সে সেসব লােকের সমান সওয়াব পাবে, যারা সে কাজটি সম্পাদন করবে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ যেব্যক্তি মানুষকে ভাল কথা শেখায়, তার জন্যে সকল বস্তু, এমনকি সমুদ্রের মাছেরা পর্যন্ত এস্তেগফার করে। * জনৈক আলেম বলেন ঃ জ্ঞানী ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলা ও তাঁর সৃষ্ট জীবের মধ্যে যােগসূত্র স্বরূপ। * বর্ণিত আছে, হযরত সুফিয়ান সওরী (রহঃ) আসকালানে এসে কিছু দিন অবস্থান করেন। কেউ তাঁকে কিছু জিজ্ঞেস করল না। তিনি বললেন ঃ আমার জন্যে সওয়ারী ঠিক করে দাও, আমি এখান থেকে চলে যেতে চাই। এ শহরে জ্ঞানের অপমৃত্যু ঘটবে। এ কথা বলার কারণ, তিনি শিক্ষাদানের মাহাত্ম্য এবং এর মাধ্যমে জ্ঞান অব্যাহত রাখতে প্রয়াসী ছিলেন। * আতা (রহঃ) বলেন, আমি হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যিবের কাছে গিয়ে দেখি, তিনি কাঁদছেন। আমি কাঁদার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন : আমাকে কেউ জ্ঞাৰুে কথা জিজ্ঞেস করে না। * জনৈক মনীষী বলেনঃ জ্ঞানীরা কালের প্রদীপ। স্ব স্ব সময়ে প্রত্যেকেই উজ্জ্বল বাতি বিশেষ। সমসাময়িক লােকেরা তাদের কাছ থেকে আলাে আহরণ করে। * হযরত হাসান বসরী (রহঃ) বলেনঃ আলেম সম

জ্ঞান অন্বেষণের মাহাত্ম (এহইয়াউ উলুমিদ্দীন)

Image
এ সম্পর্কিত আয়াতসমূহ নিম্নরূপঃ “তাদের প্রতিটি দল থেকে কিছু লােক কেন বের হয় না, যাতে তারা দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে?” “অতএব যারা স্মরণ রাখে, তাদেরকে জিজ্ঞেস কর যদি তােমরা না জানো।  হাদীস নিম্নরূপঃ * যে ব্যক্তি জ্ঞান অন্বেষণে চলে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের পথে চালাবেন।” * ফেরেশতারা জ্ঞান অন্বেষণকারীর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে তার জন্যে পাখা বিছিয়ে দেয়। * একশ' রাকআত নফল নামায পড়া অপেক্ষা জ্ঞানের কোন অধ্যায় শিক্ষা করা উত্তম। * জ্ঞানের কোন অধ্যায় শিক্ষা করা মানুষের জন্যে পৃথিবী ও পৃথিবীস্থিত সবকিছু থেকে উত্তম। * জ্ঞান অন্বেষণ কর, যদিও তা চীনে থাকে; অর্থাৎ অনেক দূরে থাকে। * জ্ঞান অন্বেষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয। * জ্ঞান একটি ভাণ্ডার, যার চাবি হচ্ছে প্রশ্ন করা । সুতরাং জ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশ্ন কর। কেননা, এতে চার ব্যক্তি সওয়াব পায়- (১) প্রশ্নকারী (২) জ্ঞানী ব্যক্তি (৩) শ্রোতা এবং (৪) যে তাদের প্রতি মহব্বত রাখে। * মূর্খ ব্যক্তি যেন তার মূর্খতা নিয়ে চুপ করে বসে না থাকে । জ্ঞানী ব্যক্তিরও তার জ্ঞান নিয়ে চুপ থাকা উচিত নয়। অর্থাৎ, মূর্খতা দূর করার জন্যে প্রশ্ন করবে এবং জ্ঞানী ব্

এহইয়াউ উলুমিদ্দীন - প্রথম অধ্যায় - প্রথম পরিচ্ছেদ - জ্ঞান, জানার্জন ও জ্ঞানদানের মাহাত্ম্য

Image
 پشيم الله الرحمن الرحيم   কোরআন মজীদে জ্ঞানের মাহাত্ম্য সম্পর্কিত আয়াতসমূহ এই ঃ  আল্লাহ তা'আলা বলেন - ফেরেশতাকুল ও মধ্যপন্থী আলেমগণ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই।  এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রথম পর্যায়ে নিজের সত্তা, দ্বিতীয় পর্যায়ে ফেরেশতাকুল এবং তৃতীয় পর্যায়ে জ্ঞানীদের কথা উল্লেখ করেছেন। জ্ঞানের শ্রেষ্ঠত্ব, মাহাত্ম ও মৌলিকতা বুঝার জন্যে এতটুকুই যথেষ্ট। আল্লাহ আরও বলেন যারা বিশ্বাসী এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আল্লাহ তা'আলা তাদের মর্তবা অনেক উঁচু করে দেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন- সাধারণ মুমিনদের মর্তবা অপেক্ষা জ্ঞানী মুমিনদের মর্তবা সাতশ স্তর বেশী হবে এবং প্রত্যেক দুস্তরের দূরত্ব হবে পাঁচশ’ বছরের সমান। আল্লাহ পাক আরও বলেন  “জিজ্ঞেস করুন, যারা জ্ঞানী এবং জ্ঞানহীন, তারা কি সমান হতে পারে?” “বান্দাদের মধ্যে একমাত্র আলেমরাই আল্লাহ্ তা'আলাকে ভয় করে।” "বলে দিন, আল্লাহ এবং কিতাবের জ্ঞানে জ্ঞানীরা আমার ও তােমাদের মধ্যে সাক্ষ্যদাতারূপে যথেষ্ট।" "যার কাছে কিতাবের জ্ঞান ছিল, সে বললঃ আমি তাকে এনে দিচ্ছি।" এতে ব্যক্ত করা হয়েছে সে লাে